টেকনাফ সংবাদদাতা::
বেফাকুল মাদারিসিল আরাবীয়া বাংলাদেশ (বেফাক) এর ৪১ তম কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে টেকনাফের সাবরাং দারুল উলুম বড় মাদরাসা ও এতিম খানা। পূর্বের ধারাবাহিকতা রক্ষা করে এ বছর ও স্টার মার্ক ( মমতাজ) সহ কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় শতভাগ ফলাফল অর্জন করেছে ।
এবারের কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় মুতাওয়াসসিতাহ ( হাস্তুূম) জমাতে ১৫ শিক্ষার্থী অংশ গ্রহন করেছিল। পাশের হার শত ভাগ। তার মধ্যে ১জন স্টার মার্ক, ১০ জন প্রথম বিভাগ ( জায়্যিদ জিদ্দান) ও ৪ জন ২য় বিভাগ (জায়্যিদ) এ উত্তীর্ণ হয়েছে।
স্টার মার্ক প্রাপ্ত শিক্ষার্থী হচ্ছে মোহাম্মদ ইলিয়াছ ( রোল নং ১০৯৬৭),
প্রথম বিভাগ ( জায়্যিদ জিদ্দান) উত্তীর্ণ শিক্ষার্থী হচ্ছে আবদুর রহীম ( রোল নং ১০৯৫৭), মোহাম্মদ জুনাইদ ( রোল নং ১০৯৫৮), মাহমুুদুল হাছান ( রোল নং ১০৯৫৯), খাইরুল আমিন ( রোল নং ১০৯৬০),মোহাম্মদ আয়াজ ( রোল নং ১০৯৬২),মোহাম্মদ হাসান ( রোল নং ১০৯৬৩) মোম্মদ সা’আদ ( রোল নং ১০৯৬৮), হামিদুল্লাহ ( রোল নং ১০৯৬৯), জাফর উল্লাহ ( রোল নং ১০৯৭০), মোহাম্মদ ইব্রাহীম ( রোল নং ১০৯৭১)
দ্বিতীয় বিভাগ ( জায়্যিদ) প্রাপ্ত শিক্ষার্থী হচ্ছে নুরুল হাছান ( রোল নং ১০৯৬১), মোহাম্মদ ইদ্রিস ( রোল নং ১০৯৬৪),মোহাম্মদ একরাম( রোল নং ১০৯৬৫), সাইফুল ইসলাম( রোল নং ১০৯৬৬),
অন্যদিকে হিফজুল কুরআন পরীক্ষায় ও ২ জন স্টার মার্ক সহ শত ভাগ পাশ করেছে। স্টার মার্ক ( মমতাজ) প্রাপ্ত শিক্ষার্থী হচ্ছে কেফায়তুল্লাহ ( রোল নং ১০২০৭), মোহাম্মদ ফাইছাল( রোল নং ১০২০৮),
৩য় বিভাগে মোশাররফুল্লাহ (রোল নং ১০২০৯)
দেওবন্দী সিলসিলার অনুসারী বেফাকুল মাদারিসিল আরাবীয়া বাংলাদেশ (বাংলাদেশ কওমী মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ) বেফাক সিলেবাস ভুক্ত এই মাদরাসাটি কেন্দ্রীয় পরীক্ষায় অংশ গ্রহণের প্রথম থেকেই প্রতি বছর ধারাবাহিক সফলতা ধরে রেখেছে।
এই ঈর্ষনীয় সাফল্য অর্জনে মহান আল্লাহ তা’য়ালার শুকরিয়া আদায় করে মাদরাসার মুহতামিম আলহাজ্ব মাওলানা মুফতী নুর আহমদ বলেন, ‘এটা মহান মহান আল্লাহ তা’য়ালার অশেষ অনুগ্রহ। এই সাফল্য আমরা আনতে পারিনি । তিনি মেহেরবানী করে দিয়েছেন। আমাদের পক্ষ থেকে সাধ্যাতীত প্রচেষ্টা ছিল। তিনি আমাদের প্রচেষ্টা কবুল করেছেন। এ জন্য আমি মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি- আলহামদু লিল্লাহ!”
তিনি এই সাফল্যের কৃতিত্ব মাদরাসার সংশ্লিষ্ট উস্তাদগণ ও পরিচালনা কমিটির বলে দাবী করেন। তিনি বলেন, “এই সাফল্যের কৃতিতের¡ দাবীদার মাদরাসার সকল উস্তাদগণের। যাদের নিরলস প্রচেষ্টায়, সার্বক্ষণিক নেগরানী এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে আমাদের ছাত্ররা এ সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে।
ছাত্রদের প্রতি উপদেশ প্রদান করে তিনি আরো বলেন, “আগামীতে ও তোমরা এধারাবাহিকতার জন্য নিজেদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে । তোমাদেরকে দৃঢ় প্রত্যয় নিয়ে অভিষ্ট লক্ষে এগিয়ে যেতে হবে। তবেই সফলতা তোমাদের পদচুম্বন করবে এবং অন্যান্য শিক্ষার্থীরা তোমাদের পথ অনুসরনে প্রেরণা যোগাবে।
উল্লেখ্য কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত টেকনাফ উপজেলায় অবস্থিত সাবরাং দারুল উলুম বড় মাদরাসা ও এতিমখানা, ফোরকানিয়া, নুরানী, হিফজ বিভাগ ও জমাতে উলা ( মিশকাত) পর্যন্ত কিতাব বিভাগ সহ প্রায় ৩৫ জন শিক্ষক/ কর্মচারী দিয়ে এ প্রাতিষ্ঠানটি শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছে । এছাড়া নারী শিক্ষার জন্য রয়েছে সাবরাং খদিজাতুল কোবরা (রাঃ) মহিলা মাদরাসা নামে আলাদা একটি প্রতিষ্ঠান। যেখানে স্থানীয় নারী শিক্ষার্থীরা সম্পুর্ন পর্দা সহকারে মহিলা শিক্ষিকা দ্বারা দ্বীনি শিক্ষা গ্রহন করছে। মাদরাসা শিক্ষা বিভাগ সুত্রে জানা যায় ১৪৩৯/৪০ হিজরী মোতাবেক ২০১৮/১৯ শিক্ষা বর্ষের ভর্তি কার্যক্রম ৮ ই শাওয়াল মোতাবেক ২৩ জুন শুরু হয়েছে। চলবে সাপ্তাহ ব্যাপী। আগ্রহী ছাত্রদের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র সহ মাদরাসা অফিসে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে। গরীব অসহায় শিক্ষার্থীদের সম্পুর্ন খরছ মাদরাসা কর্তৃপক্ষ বহন করে থাকে।
সাবরাং দারুল উলুম বড় মাদরাসা ও এতিমখানা ১৯৭৪ ইং সনে স্থাপিত হয়ে অদ্যবদি দেশ ও জাতির ধর্মীয় সেবার পাশাপাশি সমাজ সেবা মূলক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত শিক্ষা বর্ষে অত্র মাদরসায় নূরানী বিভাগ, হেফজ বিভাগ ও জামাতে উলা পর্যন্ত কিতাব বিভাগে প্রায় সহস্্রাধিক ছাত্র/ছাত্রী দৈনন্দিন দ্বীনি শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক শিক্ষা গ্রহণ করে আসছিল। একারনে চলতি শিক্ষা বর্ষে ছাত্র/ ছাত্রীদের সংখ্যা আরো বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
পাঠকের মতামত